পারিপার্শ্বিক অবস্থা, দুশ্চিন্তা, ক্লান্তি কিংবা একঘেয়ে জীবন মানুষের মধ্যে চাপ সৃষ্টি করছে প্রতিনিয়ত। এ চাপ দীর্ঘসময় বয়ে বেড়ালে হৃদ্‌রোগ সহ দেখা দিতে পারে বড় ধরনের রোগও। বলা হয়ে থাকে, সকল রোগের রসদ যোগায় মানসিক চাপ। এ চাপ নিরসনে অনেকে নিয়মিত ওষুধ খেয়ে যাচ্ছেন। পাচ্ছেন না কোনো স্থায়ী সমাধান।

মানসিক রোগে ভুগলে ব্যক্তির মধ্যে যেসব পরিবর্তন লক্ষ করা যায তা হলো, হঠাৎ বেশি উত্তেজিত হয়ে ওঠা, নিজেকে সবার কাছ থেকে সরিয়ে বা গুটিয়ে রাখার প্রবণতা, বেশি সময় ধরে মন খারাপ থাকা, কথা বলতে না চাওয়া, নিরানন্দ থাকা বা কোনো কাজে আগ্রহ কমে যাওয়া, নেতিবাচক চিন্তা করা, খাবারে অরুচি, ঘুমের স্বল্পতা, সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগা, হতাশা বা বিষণ্নতা, মনমরা হয়ে থাকা, বিরক্ত অনুভব করা, মনে ভয়ভীতি কাজ করা, কাউকে অবিশ্বাস করা ইত্যাদি। তাই ওষুধকে না বলে বেছে নিতে পারেন কার্যকরী কিছু উপায় যা সহজে কমাবে মানসিক চাপ।

মানসকি চাপ কমানোর সহজ উপায়

১◽ তাৎক্ষণিকভাবে কমানোর জন্য চুইংগাম চিবালে মানসিক চাপ ও দুশ্চিন্তা দুটোই কমে। কারণ, এতে ব্রেনে রক্ত চলাচল ঠিকভাবে হতে সহায়তা করে। ঘরের বাহিরে কয়েক মিনিট সময় কাটানোর ফলে মানসিক চাপ কমে এবং সতেজ অনুভব হয়।

২◽ এ ছাড়া দিনে অন্তত দশবার ব্রিথিং এক্সারসাইজ যেমন: লম্বা শ্বাস নিয়ে ধীরে ধীরে দম ছাড়া ব্যায়ামটির মাধ্যমে মানসিক চাপ কমে। সকাল কিংবা বিকেলে হাঁটার অভ্যাস বা ব্যায়াম শারীরিকসহ মানসিক অবস্থা ভালো রাখে।

৩◽ মানসিক চাপ থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য মেডিটেশন খুব কার্যকরী। মেডিটেশন মনকে প্রশান্তি দেয় এবং মাংসপেশিকে শিথিল করে। একই সঙ্গে নিয়মিত এবং পর্যাপ্ত ঘুম শরীরের ক্লান্তি দূর করে মনকে প্রফুল্ল রাখে।

৪◽ সুষম খাদ্যতালিকাও এ চাপ কমাতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। পরিমিত সুষম খাদ্য, ফল, শাকসবজি, প্রোটিন এবং প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে। যতটা সম্ভব তেলে ভাজা, ঝাল, শর্করা ও চর্বিজাতীয় খাবার, সিগারেট, কফি, অ্যালকোহল জাতীয় খাবারগুলো থেকে দূরে থাকতে হবে।

৫◽ প্রতিদিন কমপক্ষে ৭ থেকে ৯ ঘণ্টা না ঘুমালে মানসিক চাপ বাড়ে। সারা দিনের কাজের পর শরীর এবং মনকে নতুন করে কর্মোপযোগী করে তুলতে ঘুমের বিকল্প নেই। তাই পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করুন।

৬◽ সারা দিনে কম করে হলেও ৮ গ্লাস পানি খাওয়ার অভ্যাস করুন। পানি কম খাওয়ার সঙ্গে অন্যান্য রোগের সরাসরি যোগসূত্র আছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, পরিমিত পানির অভাবে মানসিক চাপও বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।

৭◽ এই সময়টায় সামাজিক ও পারিবারিক বন্ধনে থাকতে চেষ্টা করুন। গবেষণায় দেখা গেছে, বন্ধন এবং বন্ধুত্ব মানসিক চাপ অনেকটা কমিয়ে দিতে পারে। তাই পরিবার, আপনজন ও বন্ধুদের বেশি বেশি সময় দিন।